রংপুরের গঙ্গাচড়ার সাম্প্রদায়িক হামলার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ হিন্দু মহাসভা'র প্রতিবাদ সমাবেশ

 



০১/০৮/২০২৫ ইং রোজ শুক্রবার, বিকাল ৪.০০ ঘটিকায়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে 'বাংলাদেশ হিন্দু মহাসভার' পক্ষ থেকে সভাপতি দীপক চন্দ্র গুপ্তের সভাপতিত্বে রংপুর জেলাধীন গঙ্গাচড়া উপজেলার আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামে মিথ্যা ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে ২২টি হিন্দু ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বসত বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট,. অগ্নিসংযোগ ও নিরপরাধ রঞ্জন রায়ের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্রতিবাদ সভার বক্তব্যে দীপক চন্দ্র গুপ্ত বলেন, "গত ২৭/০৭/২০২৫ ইং তারিখে রংপুর জেলাধীন গঙ্গাচড়া উপজেলার আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামে মিথ্যা ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে ২২টি হিন্দু ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বসত বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। রিট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট (আরআইটি) এর কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রঞ্জন রায়ের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভুয়া একাউন্ট খুলে ধর্মীয় কটূক্তিমূলক পোস্ট করা হয়। এই পোস্টকে কেন্দ্র করে একদল সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে রংপুরে গঙ্গাচড়া উপজেলার বালাপাড়া গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতবাড়ীতে হামলা চালায়। মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত রঞ্জন রায়কে পুলিশ গ্রেফতার করা স্বত্ত্বেও দুর্বৃত্ত গোষ্ঠী পার্শ্ববর্তী এলাকায় মাইকিং করে লোক জড়ো করে এই ন্যাক্কার জনক হামলা চালায়। ঘটনাস্থলে প্রশাসন উপস্থিত থাকা স্বত্ত্বেও উল্লিখিত সাম্প্রদায়িক ঘটনার প্রতিকারের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই।


আমরা মনে করি, এই ঘটনা উদ্দেশ্যমূলক এবং পরিকল্পিতভাবে গুজব রটিয়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরী করে বাংলাদেশকে হিন্দু শূন্য করার একটি ঘৃণ্য অপপ্রয়াস।


উল্লেখ্য যে, উক্ত সাম্প্রদায়িক ঘটনা কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়া সত্বেও সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দোষীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ ও যথাযথ বিচার নিশ্চিত করে নাই। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জালের মতো ছড়িয়ে আছে মৌলবাদের কালো ছায়া। কট্টরপন্থী ধর্মান্ধ দুর্বৃত্তদের নাটকীয় উত্থান ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরব ভূমিকা বাংলাদেশে বসবাসরত ৩ কোটি সংখ্যালঘু হিন্দুদের মনে নানা প্রশ্ন ও ভীতি সৃষ্টি করেছে। যা এদেশে বসবাসরত সংখ্যালঘু হিন্দুদের সহাবস্থানে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে।"


"বাংলাদেশ হিন্দু মহাসভা"-এর পক্ষ থেকে উক্ত উদ্দেশ্যপ্রণিত সাম্প্রদায়িক হামলা ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত এবং ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর নিরাপত্তা, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা এবং নিরপরাধ রঞ্জন রায়ের নিঃশর্ত মুক্তির জন্য সরকার ও প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।"


উক্ত সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বাবু দিলীপ পাল চৌধুরী, মহাসচিব বীরেন্দ্র নাথ মৈত্র, যুগ্ম মহাসচিব এ্যাড, প্রভাষ চন্দ্র তন্ত্রী, দপ্তর সম্পাদক সাগর কর্মকার, অনিল পাল, স্বপন কর্মকার, গৌতম সূত্রধর, সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক সুমন হালদার,হিন্দু মহাজোটের মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে,হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র সাজন কুমার মিস্ত্রি, সোমা বড়াল সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।


মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪-

ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার = ২২ টি

ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘর = ২২ টি

গৃহহীনের সংখ্যা = ১৫০ জন

মোট আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ- ৪.৫ থেকে ৫ কোটি টাকা।



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বাংলাদেশ হিন্দু মহাসভা নামে রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মন্দির ভাংচুর

সখিপুরের সাম্প্রদায়িক হামলায় বাংলাদেশ হিন্দু মহাসভা'র প্রতিবাদ